ইউটিউবার ও অভিনেতা সালমান মুক্তাদিরের স্ত্রী দিশা ইসলামকে নিয়ে কদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে জোর আলোচনা। আগের ব্যক্তিজীবন, বিয়ে ও সন্তানের প্রসঙ্গ আসছে সামনে। তবে এসব নিয়ে কিছুই ভাবছেন না সালমান। এরই স্ত্রীর জন্মদিন উদযাপন করলেন এই তারকা।
শুক্রবার (৫ মে) ছিল সালমান মুক্তাদিরের স্ত্রী দিশার জন্মদিন। এদিন সালমান নিজের ফেসবুকে স্ত্রীর সঙ্গে জন্মদিনের কেক কাটার একটি ভিডিও শেয়ার করেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, পরিবারের সবাই মিলে দিশার জন্মদিন উদযাপন করছেন।
এদিক শেয়ার করা ভিডিওতে সালমান স্ত্রী দিশা সম্পর্কে আবেগঘন একটি স্ট্যাটাস দেন। পাঠকদের সুবিধার জন্য ক্যাপশনটির অনুবাদ নিচে তুলে ধরা হলো।
সালমান লেখেন, 'আমি সবসময় ভালোবাসার সম্পর্কের সুন্দর পরিণতিতে বিশ্বাস করে এসেছি। আর সেই সুন্দর পরিণতি হচ্ছে বিয়ে। আজীবনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে থাকতে পারবে এ বিষয়ে নিশ্চিত না হয়ে কেন একজন মানুষ কাউকে প্রতিশ্রুতি দিবে এবং সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে?
অতীতে আমি যাদের সাথে ভালোবাসার বন্ধনে জড়িয়েছি, তারা প্রত্যেকেই আমাকে অপেক্ষা করিয়েছে এবং পরবর্তীতে নানা অজুহাতে প্রত্যাখ্যান করেছে। ধীরে ধীরে আমি বুঝতে পেরেছি,আমার প্রতি তাদের ভালোবাসা এতোটা গভীর নয় যে তারা নিজেকে আমার জীবনের প্রতিকূলতার সাথে জড়াবে। জীবনের এমন অস্থির সময়ে আমি আমার স্ত্রীর দেখা পেলাম ও বন্ধু হলাম।
তখন থেকে আজ পর্যন্ত সে কখনো আমাকে কষ্ট দেয়নি, কোন অসম্মানজনক কথা বলেনি। যখনই অন্য কেউ আমাকে ছোট করতে চেয়েছে, সে অন্যের সামনে আমার মর্যাদা ও সুনাম তুলে ধরেছে। অন্য মেয়েদের মতো সে ছবি তুলে আমার স্টারডমকে কাজে লাগাতে চায়নি বরং আমার সাথে তার জীবনের সুখ-দুঃখের গল্প ভাগ করে নিতেই তার আগ্রহ ছিল বেশি। এভাবে আমরা একে অপরের ভালোবাসায় জড়ালাম এবং সিনেমার মতো সবাই এই সম্পর্কের বিরুদ্ধে ছিল।'
সালমান আরও লেখেন, 'পরবর্তী সাত মাস আমার স্ত্রী দুর্বিষহ সময় পার করেছে। সপ্তাহের পর সপ্তাহ, মাসের পর মাস গিয়েছে, সে আমাকে কল বা টেক্সট করতে পারেনি। আমি মাসের পর মাস তাকে দেখিনি। সেই মুহূর্তে আমি ধরে নিয়েছিলাম আবারও আমার ভালোবাসার করুণ পরিণতি ঘটতে যাচ্ছে। সেও বোধহয় অন্যদের মতো একই আচরণ করতে যাচ্ছে। কিন্তু সে অন্যদের মতো ছিলনা।
তাই অবশেষে সাত মাসের কষ্টময় সময় শেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এলো যখন সে তার সবচেয়ে কাছের বান্ধবীকে দিয়ে আমাকে কল করিয়ে জানতে চাইলো, সে যদি সবকিছু ছেড়ে তার বাচ্চাদের নিয়ে আমার কাছে চলে আসে আমি কি তাকে গ্রহণ করতে সক্ষম হবো নাকি তাকে বোঝা ভেবে ফিরিয়ে দিব? সত্যি বলতে কি, আমি সে সময় হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিলাম। সাথে সাথে কোন উত্তর না দিলেও ২৪ ঘন্টার চেয়ে কম সময়ে আমি সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাই। কারণ আমি বলতে পারি,তার মতো আমাকে কেউ ভালোবাসেনি।
আমি আমার জীবনে এমন কাউকে পাইনি যে সালমান মুক্তাদীরের জন্য নিজের সবকিছু ছেড়ে আসতে পারে। সে তারা সবটুকু দিয়ে আমাকে ভালোবেসেছে। তার মতো শিক্ষিত,জ্ঞানী,স্মার্ট ও দৃঢ় চিত্তের নারী আমাকে তার জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছে-এটা যেন আমার সকল প্রার্থনার প্রতিফল।
তাই অনুরোধ করবো আমার স্ত্রীর প্রকৃত গুণাবলী সম্পর্কে না জেনে কিছু লিখতে যাবেন না।সে কোন দুর্বল রমণী নয়,বরং সে আসলেই সর্বগুণ সম্পন্ন এক পরাক্রমশালী রানী যে আমার জন্য তার রাজত্ব ছেড়ে এসেছে। মাশাআল্লাহ। মহান আল্লাহর রহমত আমাদের উপর বর্ষিত হোক এবং সকল প্রকার নেতিবাচকতা ও বিষাক্ততা থেকে আমাদের দূরে রাখুক।'
শেষভাগে সালমান লেখেন, 'আমরা খুব ভালো আছি, সুখে আছি। আমার স্ত্রী আমার জীবনে সৎ পথের দিশারী হয়ে এসেছে। আসলেই কারো অতীত জীবনের উপর ভিত্তি করে তাকে যাচাই করা উচিত নয়। আমি অনুরোধ করবো,তার প্রতি আপনারা দয়াশীল হন, তার সম্পর্কে ভালোমতো জেনে মন্তব্য করুন। যারা আমাদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাদেরকে অশেষ ধন্যবাদ।'